শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির ইতিহাস

আব্দুর রহিম হাওলাদার   |   শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির ইতিহাস

১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের সাফল্যের তালিকায় যোগ হয় এক অনন্য অর্জন। বাঙালির চেতনার প্রতীক, ভাষার জন্য আত্মত্যাগের দিন, ২১শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ দিবস পায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা। জাতিসংঘের সেই স্বীকৃতির পর থেকে পৃথিবীর নানা ভাষাভাষী মানুষ দিনটি পালন করছে। ভাষার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করার পাশাপাশি নিজস্ব ভাষা আর সংস্কৃতিকে লালন করার প্রয়োজনীয়তা বিশ্বব্যাপী আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। গল্পের শুরুটা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। বাংলাদেশে না হলেও বাঙালির হাত ধরেই এই অসামান্য অর্জনের পথে যাত্রা শুরু হয়েছিল। ২৯ মার্চ কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার্স অব দ্য সোসাইটি জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব তুলে ধরেন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম দেশ থেকে অনেক দূরে থেকেও বাঙালির আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সেই প্রস্তাবনায় স্বাক্ষর করেছিলেন ভিন্ন ভাষাভাষী ১০ জন সদস্য। তবে জাতিসংঘের পরামর্শ অনুযায়ী বিষয়টি নিয়ে প্যারিসে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংগঠন ইউনেস্কোতে যোগাযোগ করা হলো।
এরই মধ্যে পেরিয়ে যায় এক বছর। কোনো সিদ্ধান্ত না আসলেও কানাডাপ্রবাসী আরেক বাঙালি আবদুস সালামকে নিয়ে ইউনেস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন তিনি। ১৯৯৯ সালের ৩ মার্চ আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পথে যাত্রা শুরু করেন রফিকুল ইসলাম। ইউনেস্কো থেকে জানানো হয়, বিষয়টি ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদের আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হলে কয়েকটি দেশ থেকে প্রস্তাব পেশ করতে হবে। বিষয়টি তেমন সহজ ছিল না। কারণ এর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সাধারণ পরিষদের সভা। তাই রফিকুল ইসলাম যোগাযোগ করেন বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার সবকিছু উপেক্ষা করে ইউনেস্কোর সদর দফতরে পাঠিয়ে দেন সেই ঐতিহাসিক প্রস্তাব। যেটি প্যারিসে পৌঁছায় ৯ সেপ্টেম্বর।
তবে উদযাপনের খরচসহ কয়েকটি কারণে ইউনেস্কোর নির্বাহী পরিষদের ১৫৭তম অধিবেশন ও ৩০তম সম্মেলনে বিষয়টি আটকে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। তবে সেখানে বেশ বড় ভূমিকা রাখেন সেসময়কার শিক্ষামন্ত্রী ও ওই অধিবেশনের প্রতিনিধি দলের নেতা এ এস এইচ কে সাদেক। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পক্ষে জনমত গড়ে তোলার পাশাপাশি অধিবেশনে সবাইকে বোঝাতে সক্ষম হন যে, দিবসটি উদযাপনে সংস্থাটির কোনো খরচ বহন করতে হবে না। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা প্রতিকূলতা পার হয়ে অবশেষে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারি পায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বিশেষ সেই মর্যাদা। ইউনেস্কোর সেই অধিবেশনে এই দিবস পালনের মূল প্রস্তাবক ছিল বাংলাদেশ ও সৌদি আরব। তবে সমর্থন ছিল পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেরই।
২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি সর্বপ্রথম ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয় প্যারিসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি পালন করা হয়। সেবছর থেকে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোতেও মর্যাদার সঙ্গে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। রফিকুল ইসলাম ও মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার্স অব দ্য সোসাইটি’র স্বীকৃতি। বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালে কানাডার মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার্স অব দ্য সোসাইটিকে একুশে পদকে ভূষিত করেন। রফিকুল ইসলাম ২০১৩ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ২০১৬ সালে রফিকুল ইসলামকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘স্বাধীনতা পদক’-এ সম্মানিত করা হয়। পৃথিবীতে একমাত্র ভাষা বাংলা,যে ভাষাকে রক্ষার জন্য ঢাকার রাজপথ বুকের তাজা রক্তে ভেসেগিয়েছিল সেই আত্তদানকে সন্মান জানিয়ে বিশ্ব দিলো তাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি।প্রবাসে আমরা এখনো প্রথম প্রজন্ম বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে এই দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছি তাহাতে কোন সন্ধেহ নেই।
কিন্তু আজ আমার কেনযেন মনে হচ্ছে আমরা প্রথম প্রজন্ম যখন পৃথিবী থেকে বিদায় নিবো তখন এই জাতীয় দিবস গুলি প্রবাসে কাহারা পালন করবে ? তাই আমি মনে করি প্রবাসে বাংলাদেশ সোসাইটি সহ সকল আন্চলিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজিবী সংগঠনগুলির উচিত আমাদের নতুন প্রোজন্মদেরকে আমাদের এই গৌরবউজ্জল জাতীয় দিবস গুলি সম্পর্কে অবহিত করা এবং জতীয় দিবসের অনুষ্ঠান গুলিতে তাদেরকে নিয়ে আসা,আমাদের বক্তব্য কমিয়ে বক্তব্যের মন্চে নতুন প্রজন্মদেরকে জায়গা করে দেওয়ার পরিবেশ তৈরিকরে তাদেরকে বক্তব্যের সুজুক করে দেওয়া।সংগঠনগুলি যদিও অনুস্ঠানের শুরুতে নতুন প্রজন্মদের কিছুটা সুজুক করে দিচ্ছে তবে তার আরও প্রসার দরকার আর তাহলেই আমরা পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার পরেও আমাদের গৌরবউজ্জল জাতীয় দিবসগুলি প্রবাসের উদজাপিত হবে।


advertisement

Posted ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(6289 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(1154 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.